নিটের প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে তদন্তে নেমেছে সিবিআই। আর সেই তদন্তে দেখা যাচ্ছে পড়ুয়ারা এই প্রশ্নপত্র কিনেছিলেন ৩৫ থেকে ৬০ লাখ টাকা দিয়ে। ঠিক করা হয়েছিল বিহারের পড়ুয়াদের ৩৫-৪৫ লাখ টাকায় প্রশ্ন দেওয়া হবে। আর অন্যান্য কয়েকজনকে ৫৫-৬০ লাখ টাকায় প্রশ্ন দেওয়া হবে। সিবিআই তদন্তে দেখা গিয়েছে অন্তত ১৫০জনেরও বেশি পরিক্ষার্থীর কাছে এই প্রশ্নপত্র গিয়েছিল।
এই পরীক্ষাকেন্দ্রগুলি ছিল গুজরাটের গোধরা, মহারাষ্ট্রের লাতুর, ঝাড়খণ্ডের হাজারিবাগ, পাটনা সহ দেশের অন্যান্য শহরে। পাটনাতে অন্তত ৩৫জনকে এই প্রশ্ন দিয়ে বলা হয়েছিল এগুলি মনে রেখে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য। সিবিআই এমনটাই জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্টে।
তবে দেখা গিয়েছে যে ১৫০জনের বেশি এই প্রশ্ন পেয়েছিলেন তাদের মধ্য়ে অর্ধেক ভালো পরীক্ষা দিতে পারেননি। কয়েকজনও পাশ নম্বরও পাননি। আয়ূষ রাজ বলে একজন অভিযুক্ত কেবলমাত্র ৬০০ নম্বর পেয়েছেন। বাকিরা একেবারে ভুল নম্বর পেয়েছেন। অনুরাগ বলে একজন পেয়েছেন মাত্র ৫ নম্বর কেমিস্ট্রিতে।
তদন্তে এনটিএ প্রায় দেড় ডজন সন্দেহজনক পড়ুয়ার তালিকা ইকোনমিক অফেন্স উইংসে পাঠিয়েছিল। তারা ওই পরিক্ষার্থীদের জেরাও করেছিল। পরে সেই মামলা যায় সিবিআইয়ের কাছে। এবার সিবিআই দেখছে ঠিক কতজন পড়ুয়ার কাছে এই প্রশ্ন গিয়েছিল। কতজন তার মধ্য়ে ভালো নম্বর পেল, কতজন খারাপ নম্বর পেল? কিন্তু প্রশ্ন জেনে যাওয়ার পরেও তারা কেন খারাপ নম্বর পেল?
এনটিএর ভূমিকাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এদিকে মনে করা হচ্ছে কোটি কোটি টাকার লেনদেন করা হয়েছে। বেশিরভাগ টাকা নগদে দেওয়া হয়েছিল। এবার দেখা হচ্ছে গোটা চক্রে কাদের কাছে টাকা গিয়েছিল? প্রচুর পাসবুক চেক, এটিএম কার্ড বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
এদিকে সর্বভারতীয় মেডিক্যাল প্রবেশিকায় (NEET-UG) দুর্নীতি নিয়ে প্রস্তাব পাশ হয়ে গেল পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায়। বুধবার বিধানসভার অধিবেশনের শুরুতেই নিট দুর্নীতি নিয়ে প্রস্তাব পেশ করা হয়। যদিও সেই প্রস্তাব পুরোপুরি অবৈধ বলে দাবি করেছে বিজেপি। সেইসঙ্গে রাজ্য সরকারকে কটাক্ষ করে বিজেপির তরফে বলা হয়েছে যে ‘অপা’-র (অর্পিতা মুখোপাধ্যায় এবং পার্থ চট্টোপাধ্যায়) খাটের নীচ থেকে টাকা উদ্ধারের দৃশ্যের সাক্ষী থেকেছেন পশ্চিমবঙ্গের মানুষ। ডাক্তারি পরীক্ষার ভার যদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের হাতে দেওয়া হয়, তাহলে তো পরিস্থিতি ভয়ংকর হয়ে উঠবে।
তবে এবার সিবিআই তদন্তে উঠে এল বিরাট তথ্য। কতটাকার লেনদেন হয়েছে তা ক্রমেই পরিস্কার হচ্ছে এবার।