১৩ বছর পর বিশ্বজয়ের স্বপ্নপূরণ। ১৭ বছর পর টি-২০ বিশ্বকাপ জয়। ভুবনজয়ী ভারতীয় ক্রিকেটারদের ঘরে ফেরায় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল ঘূর্ণিঝড় বেরিল। ঝড়ের ভ্রুকুটি কাটিয়ে অবশেষে দেশের মাটিতে পা রাখলেন রোহিত শর্মা এন্ড কোম্পানি। আজ দিনভর একাধিক সেলিব্রেশন কর্মসূচি টিম ইন্ডিয়ার। সব আপডেট পেতে নজর রাখুন।
রাত ৯টা ৩৪: রোহিত-বিরাটদের হাতে ১২৫ কোটি টকার চেক তুলে দিলেন জয় শাহ-রজার বিনি। তার পর ট্রফি হাতে ভিকট্রি ল্যাপ ভারতীয় দলের।
রাত ৯টা ২০: স্টেডিয়ামে বিরাটের নামে জয়ধ্বনি। তিনি জানালেন, “গত চারদিন যেন একটা রোলারকোস্টারে কেটেছে। এবার ঘুমাতে চাই।” বার বার ম্যাচে ফিরিয়ে আনার জন্য বুমরাহকে কৃতজ্ঞতা কোহলির। রাহুল দ্রাবিড় বিশেষ ধন্যবাদ জানালেন রোহিতকে।
রাত ৯টা ১২: জাতীয় সঙ্গীতের পর মঞ্চে রোহিত শর্মা। জানিয়ে দিলেন, “এই ট্রফি গোটা দেশের।”
রাত ৯টা ৫: ট্রফি হাতে নাচে মাতলেন রোহিত-বিরাটরা। তাঁদের সঙ্গে মাতল গোটা স্টেডিয়ামও।
রাত ৮টা ৫০: ওয়াংখেড়েতে পৌঁছল টিম ইন্ডিয়া। ট্রফি হাতে মাঠে ঢুকলেন হার্দিক পাণ্ডিয়া। সকলের মুখেই যেন যুদ্ধজয়ের হাসি। এই মুহূর্তটা দেখার অপেক্ষায় ছিল গোটা ভারতবর্ষ।
রাত ৮টা ৩০: স্টেডিয়ামের কাছে পৌঁছে গিয়েছে টিম ইন্ডিয়ার বাস। আর মাত্র কিছুক্ষণের অপেক্ষা। বাসে ট্রফিতে চুমু বিরাট কোহলির। উড়ন্ত চুমু ছুঁড়লেন ভক্তদের জন্য। জয়ধ্বনি উঠেছে অধিনায়ক রোহিত শর্মার নামে। উদযাপনে মেতেছে গোটা মুম্বই। এবার ওয়াংখেড়ে ট্রফি আগমনের অপেক্ষা।
বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের স্বাগত জানাতে কতটা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিল গোটা দেশ, তার আঁচ বৃহস্পতিবার ভোরে দিল্লি বিমান বন্দরে টের পেয়েছিল ভারতীয় দল। আর ফ্যানেদের উচ্ছ্বাসের বাঁধা ভাঙা ছবি ধরা পড়ল মুম্বইয়ে। আরব সাগরের তীরে জনসুনামি বললেও খুব একটা ভুল হবে না। বিশ্বজয়ের পর হুড খোলা বাসে ফ্যানেদের ভালবাসায় ভেসে গেলন রোহিত-বিরাটরা।
ভারতীয় ক্রিকেটের মক্কা হিসাবে পরিচিত মুম্বই। এই প্রথম মুম্বইয়ের কোনও ক্রিকেটারের নেতৃত্বে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ভারত। সেই মুম্বইয়েই সংবর্ধনা। ২০১১র স্মৃতি ফিরল বাণিজ্য নগরীতে। বিশ্বকাপ জয়ের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজ় থেকে ক্রিকেটপ্রেমীদের আহ্বান দিয়েছিলেন রোহিত। মুম্বইয়ের বিজয় উৎসবে সামিল হওয়ার অনুরোধ করেছিলেন ভারতীয় দলের অধিনায়ক। তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মেরিন ড্রাইভে ভিড় জমাতে শুরু করেন হাজার হাজার মানুষ। মুম্বইয়ের রাজপথ দখল দুপুর থেকেই নিয়ে নেন ক্রিকেটপ্রেমীরা।
সমর্থকদের আবেগ, ভালবাসা উপেক্ষা করতে পারেননি রোহিতেরাও। ১৬ ঘণ্টা বিমান যাত্রার পর দিল্লিতে পৌঁছান ক্রিকেটারেরা। তারও ১৩ ঘণ্টা পর মুম্বই পৌঁছান তাঁরা। দিল্লির হোটেলে যে ক্রিকেটারদের ক্লান্ত দেখাচ্ছিল, তাঁদেরই মুম্বইয়ে হুড খোলা বাসে চনমনে দেখাল। মানুষের ভালবাসাই বোধহয় নতুন করে তরতাজা করে তোলে বিশ্বজয়ীদের।
ওয়াংখেড়েও ওষুধের মতো কাজ করেছে। মুম্বইয়ের এই মাঠে কম-বেশি স্মৃতি রয়েছে সব ক্রিকেটারেরই। প্রায় সকলের মনেই মুম্বইয়ের এই মাঠ মাঠের আলাদা জায়গা রয়েছে।
ওয়াংখেড়ের বয়স হল ৫০। পাঁচ দশকে অসংখ্য ক্রিকেটারের বড় হওয়ার সাক্ষী এই মাঠ। ভারতীয় ক্রিকেটের বহু উত্থান, পতনের কাহিনি জানে ওয়াংখেড়ে। সেই মাঠে বিশ্বজয়ের উৎসব আলাদা মাত্রা যোগ করতে বাধ্য। সুনীল গাওস্কর, গুন্ডাপ্পা বিশ্বনাথ, দিলীপ বেঙ্গসরকার, রবি শাস্ত্রী, সন্দীপ পাটিল বা সচিনের সঙ্গে এই বিশ্বকাপের সরাসরি যোগাযোগ নেই। এই কথাই বা এত সহজে কী করে বলা যায়! অধিনায়ক রোহিত তো বটেই, এই দলের সূর্যকুমার যাদব, যশস্বী জয়সওয়াল, শিবম দুবেরা তো ওঁদের দেখেই ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। বিশ্বজয়ী দলের বাকিদের কাছেও তাঁদের গুরুত্ব কম নয়। ভারতীয় ক্রিকেটের প্রতিটি সাফল্যে পিছনে আর কোনও শহরের অবদান থাকুক না থাকুক, মুম্বইয়ের থাকবেই। একই কারণে অস্বীকার করা সম্ভব নয় ওয়াংখেড়েকেও।