একে একে সব পরিচয়ই হারিয়েছেন। কম সময়ে রাজনীতিতে উত্থানের মতোই অল্প সময়ের মধ্যে ‘সর্বহারা’ বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ। লোকসভা নির্বাচনে সর্বশেষ পরিচিতি ‘সাংসদ’ তকমাও হারানোর পরে দলের রাজ্য বা কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এখনও পর্যন্ত তাঁর পরবর্তী দায়িত্ব সম্পর্কে কোনও কথা বলেননি। অতঃপর দিলীপ জানিয়ে দিলেন, তিনি রাজনীতি ছেড়ে দেওয়ার জন্য তৈরি। শুক্রবার আনন্দবাজার অনলাইনকে দিলীপ বলেন, ‘‘আমি এ ভাবে থাকতে পারব না। আমার জন্য নির্দিষ্ট কাজ না থাকলে রাজনীতিকে টা-টা, বাই-বাই বলে দেব।’’
দলে ‘পদহীন’ দিলীপের গুরুত্ব যে কমতে চলেছে, তার ইঙ্গিত আগেই পেয়েছেন তিনি। লোকসভা নির্বাচনের পরে একটি বারের জন্যই গিয়েছিলেন দলের নতুন রাজ্য দফতরে। কোর কমিটির বৈঠকের দিন সল্টলেক অফিসে শেষ বার পা রাখার পরের দিনেই তিনি রাজ্য সফরে বেরিয়ে পড়েন। দলের কোনও নির্দেশ না থাকলেও তিনি স্বাধীন ভাবে বিভিন্ন জেলায় যান। বিজেপির পুরনো নেতা-কর্মীদের সঙ্গে দেখা করেন। কলকাতায় ফিরে আসার পরেও তাঁর সঙ্গে রাজ্যদলের পক্ষে কেউ যোগাযোগ করেনি বলেই জানিয়েছেন দিলীপের অনুগামীরা।
আর দিলীপ বলছেন, ‘‘আমি অন্য কারও মতো ‘প্রাক্তন’ পরিচয় নিয়ে কাজ করতে পারব না। যত ক্ষণ দলে রয়েছি, তত ক্ষণ কাজ করে গেলেও একটা সময়ের পরে তো সিদ্ধান্ত নিতেই হবে। রাজনীতি ছাড়াও সমাজের অনেক কাজ রয়েছে।’’ কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত তিনি কবে ঘোষণা করবেন? দিলীপ বলেন, ‘‘আরও কিছু দিন অপেক্ষা করব। দলের পক্ষে কিছু জানানো হয় কি না, তার অপেক্ষায় রয়েছি। তবে কাজ করে যাচ্ছি। আজও আমার নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে। তবে অপেক্ষার তো একটা সীমা থাকে!’’
দিলীপ যে রাজনীতি ছেড়ে অন্য কাজে যেতে পারেন, তা ঘনিষ্ঠমহলে আগেই বলেছেন। তবে এ বার তাঁর মূল সংগঠন আরএসএস-কেও সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিয়েছেন। দিলীপ বলছেন, ‘‘যাঁদের বলা দরকার, তাঁদের বলে দিয়েছি। আমি এ ভাবে কাজ করতে পারব না। আমায় অন্য সংগঠনের দায়িত্ব দিলে সেখানে যেতে পারি। না হলে আমি নিজেই ঠিক করে নেব কোন ধরনের কাজ করা যায়। বসে থাকতে পারব না।’’ খুব তাড়াতাড়িই কি সিদ্ধান্ত ঘোষণা? দিলীপ বলেন, ‘‘সব কিছু ঘোষণা করে করতে হয় না। ভাল কাজ হলে আপনা থেকেই সবাই বুঝতে পারে। তবে এখন দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে রদবদলের সম্ভাবনা। রাজ্যেও কিছু পরিবর্তন হতে পারে। সেটা দেখার পরেই সিদ্ধান্ত।’’