বাংলাদেশে ছেলের রক্তাক্ত নিথর দেহে আছড়ে পড়ে কান্না মায়ের
SHARE

সধারণ কৃষক থেকে শুরু করে শিক্ষিত তরুণদের রক্তের বিনিময়ে মুক্তিযুদ্ধ করে স্বাধীন হয়েছিল বাংলাদেশ। তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের থেকে নিজেদের হকের অধিকার ছিনিয়ে নেওয়ার জন্যে ৯ মাসের বেশি সময় ধরে লড়াই করেছিলেন তাঁরা। সেই মুক্তিযোদ্ধাদের এবং তাঁদের সন্তানদের জন্যে বাংলাদেশি সরকারি চাকরি এবং শিক্ষা ব্যবস্থায় ‘কোটা’ চালু রয়েছে। তবে সেই কোটার বিরুদ্ধেই আন্দোলনে সরব বাংলাদেশের নবপ্রজন্ম।

কারণ, ১৯৭১ সালে লড়াই করা কোনও মুক্তিযোদ্ধা বা তাঁর সন্তান এখন আর সরকারি চাকরির আবেদন করার বয়সে নেই। বর্তমানের কোটা ব্যবস্থা, সেই সব মুক্তিযোদ্ধাদের বংশধরদের জন্যে। এই আবহে মেধার স্থান হারিয়ে যাবে বাংলাদেশে। আর নিজের সেই অধিকার আদায়ের জন্যেই রাস্তায় নেমেছিল বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ। তবে সেই সব তরুণ আন্দোলনকারীদের ওপরেই গুলি চালানোর অভিযোগ উঠল হাসিনার পুলিশের বিরুদ্ধে।

বাংলাদেশে বর্তমানে চলছে ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউট। তবে তার আগে পর্যন্ত একের পর এক মর্মবিদারক চিত্র সামনে এসেছে সেদেশ থেকে। রিপোর্ট অনুযায়ী, বাংলাদেশে এখনও পর্যন্ত ৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে অসমর্থিত সূত্রের দাবি, সেই সংখ্যাটা ৫০-এর গণ্ডি ছাড়িয়ে গিয়েছে। এবং মৃতদের অনেকেই স্কুল ছাত্র। বাংলাদেশ গড়ে তোলার কথা যাঁদের, তাঁদেরই ওপরে হাসিনার নির্দেশে ‘হার্ডলাইন হামলা’ চালিয়েছে পুলিশ, ব়্যাব। অভিযোগ, অনেক আন্দোলনকারীকে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে পর্যন্ত গুলি করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার জুড়ে হাসপাতালে একের পর এক লাশ এসেছে। হাসপাতাল চত্বরগুলি ভরে উঠেছে কোল খালি হওয়া মায়েদের কান্নায়। এই মৃত পড়ুয়াদের মধ্যে একজন হলেন ১৮ বছর বয়সি ফারহান ফৈয়জ। ছেলের মৃত্যুর পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি দিয়ে তাঁর মা নাজিয়া খান বিচারের দাবি জানিয়েছেন। ফারহানের শিক্ষিকা মুনজিন শাহিদও পোস্ট দিয়ে ছাত্রের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন।

এদিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঢাকা পুলিশ এবং ব়্যাবের নির্মম কর্মকাণ্ডের একের পর এক ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছ দিনভর। এতে উত্তেজনা আরও বেড়েছে। শুধু ঢাকা নয়, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, রাজসাহী সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়েছে ছাত্রদের ক্ষোভ। আর পুলিশ রাস্তায় নেমে আন্দোলকারীদের দমন করার চেষ্টায় একের পর এক প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। খালি হয়েছে বহু মায়ের কোল।

এরই মধ্যে ভাইরাল এক ভিডিয়োতে এক মাকে হাউমাউ করে কাঁদতে দেখা গিয়েছে একটি মৃতদেহের পাশে বসে। বারবার তিনি সেই মৃতদেহের বুকে নিয়জের মাথা রেখে বলতে থাকেন, ‘আমার তো আর কেউ নাই… আমার তো আর কেউ নাই…’ এরই মধ্যে ভাইরাল হয়েছে এক ভাই হারানো দিদির আর্তনাদও। তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘গ্রাম থেকে এসে ভাই সব ক্লাসে বৃত্তি পেয়েছে। কলেজেও স্কলারশিপ পেয়েছে… চাকরি দিবি না দিবি না, মেধাবী ছাত্রটাকে কেন মারা হল?’


SHARE