সুপ্রিম কোর্টের সিবিআই পর্যবেক্ষণে ‘সত্যের জয়’ দেখছে তৃণমূল। রাজ্যের শাসকদলের বক্তব্য, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলির অপব্যবহার করে যাঁরা গণতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচিত রাজ্য সরকারের অধিকার খর্ব করতে চান, সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত তাঁদের একটা শিক্ষা দিল। পাল্টা বিজেপির বক্তব্য, এটা কেবল পর্যবেক্ষণ। রায় নয়। কোর্ট এমন কিছু বলেনি, যাতে তৃণমূলের আনন্দ পাওয়ার মতো কিছু আছে।
পশ্চিমবঙ্গে সিবিআই তদন্তের ঢালাও ছাড়পত্র বা ‘জেনারেল কনসেন্ট’ প্রত্যাহার করার পরেও সিবিআই রাজ্যের অনুমতি ছাড়া একের পর এক মামলায় এফআইআর করতে শুরু করায় সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল রাজ্য সরকার। বুধবার পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অভিযোগকে মান্যতা দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
বুধবার বিচারপতি বিআর গাভাই এবং বিচারপতি কেভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, কেন্দ্র যে সিবিআইয়ের অপব্যবহার করছে, তা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের অভিযোগের গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। সিবিআই এফআইআর দায়ের করতে গেলে রাজ্যের অনুমতি প্রয়োজন, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সেই বক্তব্যেরও গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে বলে মনে করছে শীর্ষ আদালত। এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ১৩ অগস্ট।
শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ প্রকাশ্যে আসার পরেই তৃণমূলের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডল থেকে একটি পোস্ট করা হয়। সেই পোস্টে লেখা হয়, “সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ থেকে স্পষ্ট, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলাকে কেউ রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যাহত করতে পারবে না।” তৃণমূল মুখপাত্র শান্তনু সেন বলেন, “১৯৬৩ সালে তৈরি হওয়া সিবিআই বিজেপির বিশ্বস্ত শাখা সংগঠনে পরিণত হয়েছে।
বিরোধীশাসিত রাজ্যে রাজনৈতিক শাখা সংগঠন হিসাবে তাকে ব্যবহার করা হচ্ছে। আমরা জেনারেল কনসেন্ট বা সম্মতিপত্র তুলে নেওয়ার পরেও বিভিন্ন ক্ষেত্রে সিবিআই জোর করে তদন্ত চালিয়ে গিয়েছে। আমরা এর বিরুদ্ধে আদালতে গিয়েছিলাম।” একই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, “বুধবার সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণে দেশের সংবিধান, ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের জয় হল।”
সুপ্রিম-পর্যবেক্ষণ প্রসঙ্গে রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, “রাজ্যের এক্তিয়ারকে অগ্রাহ্য করে সিবিআই-সহ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় এজেন্সি বিবিধ কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা অভিযোগ করেছিলাম যে, রাজ্য সরকার তদন্তের ক্ষেত্রে সম্মতিপত্র প্রত্যাহার করার পরেও সিবিআইয়ের মতো কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি রাজ্যের অধিকারে হস্তক্ষেপ করছে। মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, আমাদের বক্তব্যের সারবত্তা রয়েছে।”