বেশি টাকা রিচার্জ করেও মিলছেনা ন্যায্য ইউনিট। বিদ্যুৎ নিগমের তুঘলকি কাণ্ডে মাথায় হাত গ্রাহকদের। কুমারঘাটের নিগম অফিসে কর্তৃপক্ষের ভূমিকায় ক্ষোভ উগড়ে দিলেন নিগমের প্রিপেইড ভোক্তারা।
হটাৎই বিদ্যুতের প্রিপেইড মিটার রিচার্জের নামে গ্রাহকদের থেকে কেটে নেওয়া হচ্ছে অধিক অর্থ। মূলত শেষ রিচার্জ করা পর্যন্ত যে টাকায় যতো ইউনিট দেওয়া হতো গ্রাহকদেরকে চলতি সপ্তাহ থেকে সেই রিচার্জে গ্রাহকদেরকে অনেকটাই কম ইউনিট দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ বিদ্যুৎ ভোক্তাদের। গত কয়েকদিন ধরে এই বিষয়টি নিয়ে ত্রিপুরার বিভিন্ন জায়গায় ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে গ্রাহকদের মধ্যে। বিভিন্ন বিদ্যুৎ অফিসেও এই বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ জানাচ্ছেন গ্রাহকরা। সোমবার ঊনকোটি জেলার কুমারঘাট স্থিত নিগমের অফিসেও রিচার্জ করতে গিয়ে এমনই সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে গ্রাহকদেরকে। ভোক্তাদের অভিযোগ, কেউ এক হাজার টাকা রিচার্জে আগে যেখানে পেতেন একশো ইউনিট বা তার থেকে বেশি সেখানে বর্তমানে তেরশো টাকা রিচার্জ করে পাচ্ছেন মাত্র পঞ্চাশ থেকে পঞ্চান্ন ইউনিট কারো ক্ষেত্রে সেটি কমে গিয়ে হয়ে যাচ্ছে কুড়ি থেকে বাইশ ইউনিটও। শুধু তাই নয়, কারো কারো ক্ষেত্রে দুশো বা তিনশো টাকার রিচার্জ করতে গেলেও এতো কম টাকার রিচার্জ করা যাবেনা বলে অফিস থেকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ গ্রাহকদের। এনিয়ে গ্রাহকরা কর্তৃপক্ষকে জিজ্ঞেস করলে তারা উর্ধতন কর্তাদের দোহাই দিয়ে দায়িত্ব খালাস করছেন বলে অভিযোগ। গ্রাহকদের পকেট কাটতে নিগমের এই তুঘলকি কাণ্ড বলে এদিন নিগমের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেন গ্রাহকরা।
এদিন কুমারঘাট অফিসে রিচার্জ করতে যাওয়া আরো এক গ্রাহক বললেন গ্রাহকদেরকে না জানিয়ে বা কোন বিজ্ঞপ্তি জারি না করেই এমনভাবে ইউনিটে অতিরিক্ত টাকা নিয়ে নিচ্ছে বিদ্যুৎ নিগম। কেন এমনটা হচ্ছে তা কিছুই বুঝে উঠতে পারছেননা তারা। এনিয়ে সোমবার কুমারঘাটের নিগম অফিসে গ্রাহকদের একাধিক প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছে নিগম কর্মীদেরকে। জানাগেছে বিদ্যুৎ নিগমের সঙ্গে চুক্তিতে রিচার্জ মিটার গ্রাহকদের ঘরে পৌছে দিয়েছে জেনাস নামে একটি বেসরকারী সংস্থা। আর তাদের রিচার্জের সফ্টওয়ার আপডেট করার পরই এই সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে গ্রাহকদেরকে।
এবিষয়ে কুমারঘাট অফিসে নিগমের মেনেজার সূর্য্য চাকমাকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনিও এই বিষয়টি নিয়ে স্পষ্ট করে কিছুই বলতে পারলেননা সংবাদ মাধ্যমের সামনে। শুধু আমতা আমতা করে দোষ ঠেলে দিলেন তার উর্ধতন কর্তাদের উপর। তার দাবী, রাজ্যের সর্বত্রই প্রিপেইড মিটারে এমন সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। তিনি জানান, সফ্টওয়ারে সমস্যা জনিত কারনে গত কয়েকমাস ধরে প্রিপেইড গ্রাহকদের কর বাবদ কোন টাকা কাটা হয়নি। বর্তমানে নতুন সফ্টওয়ারে কাজ শুরু হতেই বকেয়া সব টাকা কাটা হচ্ছে। কিন্তু কবে থেকে এমনটা হচ্ছে তার উত্তর দিতে পারলেননা নিগম আধিকারিক নিজেও। আর এর থেকেই স্পষ্ট নিগমের কর্পোরেট অফিস থেকে নতুন সিষ্টেমে গ্রাহকদের টাকা কাটলেও তার বিষয়ে অবগত করা হয়নি নিগমের অফিসগুলোকে।
গত কয়েকদিন ধরেই এই সমস্যার শিকার হতে হচ্ছে গ্রাহকদেরকে। অনেককে আবার অফিসের প্রয়োজন মতো টাকা আনতে না পারায় রিচার্জ না করেই ফিরে যেতে হচ্ছে বাড়ীতে। আর এই পরিস্থিতিতে ভোক্তাদের ক্ষোভের দাবানল ছড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন নিগম অফিসগুলোতে। যেকোন সময় এই ক্ষোভ মারাত্মক আকার নিতে পারে বলেও এলাকায় গুঞ্জন। গ্রাহকরা চাইছেন তাদের পকেট না কেটে পুরনো কায়দাতেই করা হোক রিচার্জের ব্যাবস্থা। এই অবস্থায় রাজ্য বিদ্যুৎ নিগম কোন পথে হাঁটে এবারে এটাই দেখার।