একাধিক সমস্যায় ধুঁকছে রাজ্যের ধলাই জেলার বিরাশিমাইল হাসপাতাল। নেই পানীয় জলের পর্যাপ্ত ব্যাবস্থা থেকে বিকল্প বিদ্যুৎ ব্যাবস্থা। ভবনের ছাদ থেকে প্রতিনিয়ত খসে পড়ছে ফলের স্তরা। সেই ভগ্ন ছাদের নিচেই চলছে রোগীদের চিকিৎসা পরিষেবা। নতুন ভবন তৈরী হলেও তা চালু করা হচ্ছেনা এখনো। দাবী উঠছে নজরদারির। পরিবর্তনের ত্রিপুরায় যেমন উন্নয়নের জোয়ার বইছে তেমনি স্বাস্থ্য পরিষেবারও আমুল পরিবর্তন হয়েছে বলে প্রতিনিয়তই জোর গলায় দাবী করেন রাজ্যের সরকার প্রধান থেকে শাসক নেতা মন্ত্রীরা। এদিকে দিকে দিকে স্বাস্থ্য পরিষেবার হাল বেহাল বলে অভিযোগ তুলে সরকারের ভূমিকায় প্রশ্ন তুলতে দেখা যায় রাজ্যের বিরোধী দলগুলোকে। কিন্তু এবারে প্রশ্ন হলো কারা ঠিক বলছে? সরকার পক্ষ? নাকি বিরোধীরা?
রাজ্যের দিকে দিকে গ্রামীন এলাকার একাংশ হাসপাতালগুলোর স্বাস্থ্যের অবস্থা কিন্তু বিরোধীদের অভিযোগের উপরই কার্যত সিলমোহর দিচ্ছে।
রাজ্যের ধলাই জেলার বিরাশিমাইলে অবস্থিত সরকারী প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বর্তমান অবস্থা আর রোগীদের বক্তব্যেই স্পষ্ট, রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবার পরিকাঠামোগত উন্নয়ন আসলেই তলানিতে। সংষ্কারের অভাবে হাসপাতাল ভবনের ছাদ থেকে প্রতিনিয়ত খসে পড়ছে পলের স্তরা। যার নিচেই চলছে রোগীদের চিকিৎষা পরিষেবা। তাছাড়া হাসপাতালটিতে নেই বিকল্প বিদ্যুতের ব্যাবস্থা। ফলে হাসপাতালে ফ্যান থাকলেও বিদ্যুৎ চপলতার দরুন প্রতিনিয়ত গরমে হাঁসফাস করতে হয় হাসপাতালে থাকা রোগী থেকে তাদের সথে থাকা লোকজনদেরকে। হাসপাতালে ভর্তী থাকা তাপস দে নামের এক রোগী জানালেন, হাসপাতালে রোগীদের জন্য থাকা শৌচালয়েরও অবস্থাও শোচনীয়। ভেঙে পড়ছে দরজা জানালা। নেই পর্যাপ্ত জলের ব্যাবস্থা। দিনের পর দিন ধরে এই অবস্থা চলে আসলেও এর হাল ফেরাতে কেউই উদ্যোগ নিচ্ছেনা বলে অভিযোগ
এদিকে হাসপাতালে চিকিৎসারত আরো এক রোগীও তুলে ধরলেন চিকিৎসালয়ের করুন অবস্থার কথা। তিনি জানিয়েছেন, সঠিকভাবে পরিষ্কার করা হয়না রোগীদের জন্য থাকা শৌচালয়। ফলে দূর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছেন তারা। তাছাড়া হাসপাতালে রোগীদের জন্য নেই পানীয় জলের সু-ব্যাবস্থা। ফলে বাজার থেকে কিনে এনে জল খেতে হচ্ছে হাসপাতালে ভর্তী থাকা রোগীদেরকে। যা সবার পক্ষে সম্ভবপর হয়ে উঠছেনা।
এদিকে হাসপাতালের অচল অবস্থা নিয়ে রোগীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সেখানে কর্মরত এক নার্সকে জিজ্ঞেস করা হলে রোগীদের অভিযোগের সত্যতা তুলে ধরে তিনি আরো জুড়ে দিলেন হাসপাতালের সমস্যার কথা। তিনি জানিয়েছেন, সংষ্কারের অভাবে বেহাল হয়ে পড়েছে হাসপাতাল ভবন। বৃষ্টি হলেই ভবনের ছাদ বেয়ে বৃষ্টির জল প্রবেশ করে গোটা হাসপাতালে। বিকল্প বিদ্যুৎ ব্যাবস্থা না থাকায় হাসপাতালে বিদ্যুৎ না থাকলে রোগীদেরকে দেওয়া যাচ্ছেনা ফ্যানের পরিষেবা। শুধু তাইনয়, হাসপাতালে দন্ত এবং আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকেরও প্রয়োজনের কথা জানালেন ঐ স্বাস্থ্যকর্মী। এদিকে পর্যাপ্ত শয্যার আভাবে কখনো কখনো হাসপাতালের মেঝেতে শুয়েও চিকিৎসা পরিষেবা নিতে হচ্ছে ঐ এলাকার একাংশ রোগীদেরকে। যদিও এই হাসপাতালের জন্য তৈরী করা হয়েছে নতুন একটি পাকা ভবন কিন্তু তবুও দীর্ঘদিন ধরেই কোন এক অজ্ঞাত কারনে অর্ধসমাপ্ত অবস্থায় পরে থাকার ফলে চালু হচ্ছেনা নতুন ভবনটি। এদিকে পুরনো ভবনে কার্যত জীবনের ঝুঁকি নিয়েই স্বাস্থ্য পরিষেবা নিতেহচ্ছে রোগীদেরকে। আর বিরাশিমাইল হাসপাতালের এই অবস্থাই বলে দিচ্ছে সুস্থ্য নেই ত্রিপুরার বর্তমান স্বাস্থ্য পরিষেবা। দাবী উঠছে এই হাসপাতালটির দিকে নজর দিক কর্তৃপক্ষ।